ফাইল ছবি
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বলেছেন, আমরা কখনোই আওয়ামী লীগের দোসর ছিলাম না, আমরা সব সময় জনগণের দোসর ছিলাম।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পতন না হলে কোনো দলই বাংলাদেশে থাকত না। শুধু আওয়ামী লীগ থাকত।
আজ দলের বনানী কার্যালয়ে মহিলা পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ জোর করে নির্বাচনে নিয়েছে। এতে দল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি তো ২০০৮ সালে মন্ত্রী ছিলাম। তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেছিলাম।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমি কখনো মন্ত্রিত্বের জন্য রাজনীতি করি না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে যাইনি এবং সংসদেও যাইনি। তখন আওয়ামী লীগ আমাকে মন্ত্রিত্ব দিতে চেয়েছিল, ২০১৪ সালে যখন আমরা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তখন আরেকটা গ্রুপ বানিয়ে তাদের লাঙ্গল মার্কা দিয়ে নির্বাচনে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল সরকার। আমি বিশ্বাস করিনি, তাই ২০১৪ সালের নির্বাচনে ২৭০ প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছিলাম।
২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বাধ্য করা হয় নির্বাচনে যেতে, এটা সবাই জানে।
অনেকেই বলেন, আমরা নাকি আওয়ামী লীগকে দানব বানিয়েছি- এ কথা জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, আমাদের সমর্থন না পেলে আওয়ামী লীগ দানব হতো না? আওয়ামী লীগ সুযোগ পেয়েছে দানব হয়েছে। এখন যারা বড় বড় কথা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগের আমলে কতজন কথা বলতে পেরেছেন? আওয়ামী লীগ উঠিয়ে নিলে আপনিও জয়বাংলা বলতেন। অনেকে জয়বাংলা বলেছে না?
জিএম কাদের আরও বলেন, আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে তাদের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের জন্য। বৈষম্য সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ শোষণ, লাঞ্ছনা ও বঞ্চনা করে মানুষকে বিরক্ত করেছিল। নির্বাচনে বৈধতার জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়নি। শেখ হাসিনার গোয়ার্তুমির জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। মানুষ বিরক্ত হতে হতে এমন অবস্থায় গেলো যে, জীবন দিতে হলেও ফিরব না।
আওয়ামী লীগের পতনে কোনো রাজনৈতিক দলের কৃতিত্ব নেই জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, অনেক দল তো নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়নি, পতন হয়েছে তাদের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের জন্য। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে- এই কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালে আমরা আওয়ামী লীগ বা বিএনপির সঙ্গে ছিলাম না। আমরা আলাদাভাবে নির্বাচন করেছিলাম। ওই নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করেছিল। তখন তারা র্যাব গঠন করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করেছিল, দলীয়করণ, দলীয় লোক দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তৈরি করেছিল। এর ফলে এক-এগারো এসেছিল। মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে সরকার গঠন করে দেশ চালিয়েছে স্বৈরাচারী কায়দায়।
প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- জাপা মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. মুজিবুল হক চুন্নু।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মনিরুল ইসলাম মিলন, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসরুর মওলা, জসীম উদ্দিন ভূইয়া প্রমুখ।